নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ছোট ফেনী নদী। এখানে আছে নতুন ডাকাতিয়া, পুরনো ডাকাতিয়া ও ছোট ফেনী নদীর প্রাকৃতিক দৃশ্য, নৌকা ভ্রমনের অসাধারণ আনন্দ-অভিজ্ঞতা, সকালের শান্ত মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ, নদীর কূলঘেঁষা সবুজ বনায়ন, পশ্চিমে সোনালি ফসলের মাঠ, দক্ষিনে যেতে বন বিভাগের সবুজ বনায়ন, পাখির কলতান, জেলেদের মৎস উৎসব ও গ্রাম্য ঐতিহ্য ইত্যাদি।
সাগরে জোয়ার এলে প্রায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ৩ কিলোমিটার প্রস্থের সমুদ্র সৈকতে নয়নাভিরাম ছোট বড় ঢেউ আছড়ে পরে। ক্লোজারের দুই পাশে আছে পাথরের গাঁথুনি, পাশে মুছাপুর রেগুলেটর। এখান দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যায় সুর্যদোয় ও সুর্যাস্ত। স্পিডবোর্ট, ট্রলার ও ডিংগি নোকায় করে অনেকেই ঘুরে বেড়ান। এক কথায় অপরূপ এ এলাকাটি ‘মুছাপুর ক্লোজার সৈকত’ নামে পরিচিত। দর্শনার্থীদের কাছে অঘোষিত পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এটি। নোয়াখালী ও ফেনী জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মনোরম প্রকৃতির টানে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এখানে ছুটে আসেন।
পশ্চিমে বাগতারা বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত পাকা সড়ক। দুই পাশে সারিবদ্ধ ঝাউ গাছ। পশ্চিমে হাজার হাজার একর ফসলি জমি। পানি যাতায়াতের জন্য খনন করা মাটির স্তূপে নির্মিত কৃত্রিম পাহাড়। এসব নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্যই টেনে আনছে দর্শনার্থীদের।
দিয়ারা বালুয়া: স্থানীয় ভাষায় – বাল্লা চর বা দিয়ারা বাল্লাঃ
জায়গাটা মুছাপুর যাওয়ার আগে বাগদারা বাজার থেকে দক্ষিণে। নদী ভাঙ্গা এলাকা। মুছাপুর গেলে সাথে এই জায়গাটাও দেখে আসা যায়। তবে নদী ভাঙ্গার কারণে আগের মতো সুন্দর এখন লাগেনা। চাইলে মুছাপুর ভ্রমণে গিয়ে এই জায়গাটাও কভার করতে পারেন। তবে এই পথে কেবলমাত্র মোটর বাইক ভালো চলে, ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে গেলে ঐ পথে যাওয়া যাবে না। আর এখানে অবশ্যই গেলে এলাকার পরিচিত কাউকে সাথে রাখতে হবে।
যাতায়তঃ
মাইজদি, সোনাপুর হয়ে কোম্পানীগঞ্জ, বসুরহাট পৌঁছে সেখান থেকে সিএনজি, অটো রিক্সা ভাড়া করে নিতে পারেন। বসুরহাট থেকে বাংলা বাজার, অতপর দক্ষিনে চৌধুরী বাজার পার করে ২ কিলোমিটার রাস্তা হয়ে চার রাস্তার মোড় দিয়ে পূর্ব দিকে জনতা বাজার এর পর দক্ষিণে ১.৫ কিলোমিটার রাস্তার অতিক্রম করে একটু পূর্বে গেলেই মুছাপুর ক্লোজার। এছাড়া মাইজদি থেকে ব্যক্তিগত বা গাড়ি ভাড়া করে সারাদিন ব্যাপী ঘুরে বেড়াতে পারেন।
খাবারঃ
দুপুরের খাবার সবচেয়ে ভালো হবে বসুরহাট ফিরে এসে খেলে। এছাড়াও স্থানীয় ভাবে কিছু হোটেল আছে সেখানেও খেতে পারেন আপনি, তবে দাম সেক্ষেত্রে কিছুটা বেশি হতে পারে ও মান সন্তোষজনক নাও হতে পারে।
রাত্রিযাপনঃ
এখানে রাত্রিযাপন এর জন্য নির্ধারিত কোনো আবাসিক হোটেল নেই। কোম্পানীগঞ্জ, বসুরহাটে কিছু মোটামুটি হোটেল আছে এছাড়া মাইজদিতে বেশ কিছু ভালো হোটেল, গেস্ট হাউজ আছে।
সতর্কতাঃ
প্রকৃতিকে ভালোবাসুন, প্রকৃতি অবশ্যই সেটার সুফল আপনাকে দেবে। দয়া করে পরিবেশ নষ্ট করবেন না। আপনার কর্মকান্ডের সুফল/কুফল আপনার পরবর্তী প্রজন্মকে ভোগ করতে হবে।
ধন্যবাদ।
আপনি যদি চান একজন বা একাধিকজন মিলে সারাদিন এই এলাকায় ঘুরবেন, দেখবেন, খাবেন তবে আরো বিস্তারিত জানতে ও সাহায্যের জন্য বা একজন গাইড বা পুরো ট্যুর ম্যানেজ করার জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ইমেইল করুনঃ [email protected] আমরা সর্বাত্বক সাহায্য করবো।
আমার লেখায় আমার নোয়াখালী। ছবি বিভিন্ন জনের থেকে প্রাপ্ত। লেখা অনেকগুলো তথ্য মিলিয়ে লেখা।