মোহাম্মদপুর, সুবর্ণচর, নোয়াখালী

সুবর্নচর, মোহাম্মদপুরে একদিনের ভ্রমণ, বিস্তারিত আছে এই লেখায়।

নোয়াখালী জেলার দক্ষিণ পুর্ব প্রান্তে অবস্থিত একটি মনোরম প্রকৃতিবেষ্টিত ইউনিয়ন। দক্ষিণ,পূর্ব ও উত্তরপূর্ব প্রান্তে নদীবেষ্টিত এই অঞ্চলের মানুষের প্রধান জীবিকা হচ্ছে কৃষি ও মৎস্য। পুরো মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন যেন মহান রবের নিজ হাতে ঢেলে সাজানো এক অপরূপ সৌন্দর্য। নদীতে যখন জোয়ার থাকেনা তখন যেন এর সৌন্দর্য পরিপূর্ণতা পায়।

ইউনিয়নের পুর্বাংশে রয়েছে চরলক্ষ্মী ঘাট,যেখান থেকে উড়িরচর এবং সন্দ্বীপ যাওয়া যায় নৌকাযোগে। এছাড়াও নদীতীরজুড়ে রয়েছে বিভিন্ন মৌসুমী ফসল। নদীতীরে বসে আপনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিতে পারবেন অনায়াসে। নদীতীরে বসে আপনি উপভোগ করতে পারেন ছোট ছোট ডিঙ্গী নৌকায় করে জেলেদের মাছ ধরার উৎসব। যখন জোয়ার থাকেনা তখন আপনি নদীর তলদেশ ছুঁয়ে দেখতে পারেন খুব সহজে। একেবারেই নির্মল আর প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সেখানকার মানুষের সহাস্য ব্যাবহার আপনাকে মুগ্ধ করবেই।

দক্ষিণে নদীর দিকে যাওয়ার সময় রাস্তার দু’পাশ জুড়ে সবুজের সমারোহ আপনাকে বিমোহিত করবেই। চাইলে কিছুক্ষন রাস্তার পাশে বসে উপভোগ করতে পারবেন সেই নির্মম সুন্দর প্রকৃতি। দক্ষিণে কাটাখালি অংশ থেকে স্বর্ণদ্বীপ ও ভাষানচর যাওয়ার ব্যবস্থা আছে,তবে অবশ্যই এক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর অনুমতি লাগবে। এখানে বসে আপনি উপভোগ করতে পারবেন চড়তে থাকা বিশাল মহিষের পাল।চারদিকে ধু-ধু মরুর মত এই এলাকায় আপনার অন্তরাত্না প্রকৃতির সাথে একাকার হয়ে যেতে বাধ্য।

দক্ষিণ,পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব এলাকার ঘাট থেকে আপনি নদীর মাছ কিনতে পারবেন। চাইলে দুপুরের খাবারও খেয়ে আসতে পারেন নদীতীরের খাবারের হোটেল থেকে। দুপুরের খাবারে আপনি পাবেন বাহারি রকমের নদীর মাছ,দেশি মুরগি ইত্যাদি।

যাতায়াতঃ
নোয়াখালী,সোনাপুর থেকে সিএনজিযোগে আক্তার মিয়ার হাট। দুরত্বে ৩০ কি.মি. এই পথ অতিক্রম করতে জনপ্রতি সিএনজি ভাড়া ৭০ টাকা দিতে হবে আপনাকে। সেখান থেকে পুর্বদিকে নদীতে যেতে হলে অটোরিকশা,ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলযোগে যেতে পারবেন। ভাড়া ৪০-৬০(কমবেশি)টাকা জনপ্রতি। দক্ষিণ দিকে নদীতে যেতে হলে একই বাহনে আপনাকে ৫০-৭০(কমবেশি)টাকা ভাড়া গুনতে হবে। যাত্রাপথে রাস্তার দুপাশের প্রকৃতি আপনাকে বুঝিয়ে দেবে মোহাম্মদপুর কত নির্মল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত যায়গা।

খাবারঃ
দুপুরের খাবার সবচেয়ে ভালো হবে “আক্তার মিয়ার হাট” বাজারে এসে খেলে। এছাড়া নদীতীরে কিছু হোটেল আছে সেখানেও খেতে পারেন আপনি,তবে দাম সেক্ষেত্রে কিছুটা বেশি হতে পারে।

রাত্রিযাপনঃ
এখানে রাত্রিযাপন এর জন্য নির্ধারিত কোনো আবাসিক হোটেল নেই। তবে একান্তই থাকতে হলে এখানকার মসজিদে থাকতে পারেন যা আপনার জন্য একদমই নিরাপদ।

সতর্কতাঃ
প্রকৃতিকে ভালোবাসুন, প্রকৃতি অবশ্যই সেটার সুফল আপনাকে দেবে। দয়া করে পরিবেশ নষ্ট করবেন না। আপনার কর্মকান্ডের সুফল/কুফল আপনার পরবর্তী প্রজন্মকে ভোগ করতে হবে।
ধন্যবাদ।

আপনি যদি চান একজন বা একাধিকজন মিলে সারাদিন এই এলাকায় ঘুরবেন, দেখবেন, খাবেন তবে আরো বিস্তারিত জানতে ও সাহায্যের জন্য বা একজন গাইড বা পুরো ট্যুর ম্যানেজ করার জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ইমেইল করুনঃ [email protected] আমরা সর্বাত্বক সাহায্য করবো।

আমার লেখায় আমার নোয়াখালী।💗 লিখেছে, মাসুম জামান, আরডিএন ভলেন্টিয়ার।